গোপালগঞ্জে লাখো মানুষের ভোগান্তি লাঘবে এলজিইডির বাস্তবায়নে সিন্দিয়াঘাট-টেকেরহাট সংযোগ সড়কের কাজ শুরু, উচ্ছ্বসিত এলাকাবাসী, RCIP প্রকল্পের অধীনে সড়কের সংস্কার কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে।
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) গোপালগঞ্জ-এর বাস্তবায়নে
রুরাল কানেক্টিভিটি ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট (RCIP) -এর আওতায়
মুকসুদপুর উপজেলার বনগ্রাম জিসি টু টেকেরহাট জিসি ভায়া সিন্দিয়াঘাট জিসি পর্যন্ত প্রায় ১৪,৬০০ মিটারের মধ্যে বিশেষ করে ৬৯০ মিটার খানা-খন্দে ভরা ব্যবহার অনুপযোগী সড়কের সংস্কার কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। নির্মাণ কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলায় জনমনে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
রুরাল কানেক্টিভিটি ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট (RCIP) হলো বাংলাদেশ সরকারের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (LGED) কর্তৃক বাস্তবায়িত একটি প্রকল্প, যার উদ্দেশ্য হলো গ্রামীণ অবকাঠামোর উন্নয়ন এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি করা। এই প্রকল্পের প্রধান লক্ষ্য হলো প্রায় ২,৭০০ কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ককে আবহাওয়া-প্রতিরোধী মানে উন্নীত করা, গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্থার সক্ষমতা বৃদ্ধি করা এবং একটি রক্ষণাবেক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা গড়ে তোলা।
২১ কোটি ৭৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্পের আওতায় মোট দুইটি প্যাকেজের প্রথম প্যাকেজের কাজ (কমলাপুর- চাঁদহাট জিসি ০০–৩,৮০০মিটার) যা ইতোপূর্বেই সম্পন্ন হয়েছে। দ্বিতীয় প্যাকেজের কাজ (বনগ্রাম জিসি টু টেকেরহাট জিসি ভায়া সিন্দিয়াঘাট জিসি – ১০,৮০০ মিটার) চলমান রয়েছে। যা আগামী ২০২৬ সালের জুন মাসের আগেই সম্পন্ন করতে হবে বলে ওয়াক অর্ডারে উল্লেখ রয়েছে। তবে সিন্দিয়াঘাট – টেকেরহাট এলাকায় বিএডিসি সারের গোডাউন ও বিসিআইসি খাদ্য গোডাউন, সিন্দিয়াঘাট পুলিশ ফাঁড়ি এবং চরপ্রসন্নদি বাজারে বিভিন্ন ধরনের পণ্যের পাইকারি ও খুচরা শতশত দোকান থাকায় ব্যস্ততম ওই সড়কের সংস্কার কাজে গুণগত মান সম্পন্ন রড, পাথর, সিলেকশন বালু ও ভালোমানের সিমেন্টের সংমিশ্রণে আরসিসি ঢালাই দিয়ে ৬৯০ মিটার সড়ক সংস্কারের কাজ দ্রুতগতিতে চলছে যা আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই শেষ হবে বলে জানিয়েছেন মুকসুদপুর উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর।
মেসার্স কামরুল এন্ড ব্রাদার্স ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এ প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব পেয়েছে।
এদিকে খানাখন্দে ভরা এবং বছরের বেশিরভাগ সময় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়া ওই সড়কটি দীর্ঘদিন যাবত সংস্কার না হওয়ায় স্থানীয় এলাকাবাসী সহ লাখ লাখ পথচারী ও ভারী যানবাহন চলাচলে ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
অবশেষে গোপালগঞ্জ এলজিইডি’র বাস্তবায়নে সংস্কারের অধিকাংশ কাজ ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হওয়ায় জনমনে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ী মোঃ ইমরুল হোসেন কায়েস অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে গণমাধ্যমকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এ সড়কটি খানাখন্দে ভরা ও ব্যবহার অনুপযোগী ছিলো। জনদুর্ভোগের কথা বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচারিত হলে সরকারি উদ্যোগে গোপালগঞ্জ এলজিইডি’র বাস্তবায়নে এ সড়কের সংস্কার কাজ দ্রুতগতিতে চলছে। কাজের গুণগত মানও ভালো। তাছাড়া গোপালগঞ্জ এলজিইডি ও মুকসুদপুর উপজেলা এলজিইডি অফিসের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক তদারকিতে কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকেন। আমরা এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে সাংবাদিক সহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানাই। এ সড়ক সংস্কারের কাজটি সম্পন্ন হলে লাখো মানুষ উপকৃত হবেন।
রাঘদী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও এলাকার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন গণমাধ্যমকর্মীদের দেখে এগিয়ে এসে বলেন, দীর্ঘদিন অবহেলায় পড়ে থাকা সড়কটি সংস্কার করায় আমরা খুবই আনন্দিত। এখন পর্যন্ত কাজের মান ভালোই দেখছি। বাকি কাজও যেন গুণগত মান বজায় রেখে সম্পন্ন হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে তিনি সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানান।
এ সময় ওই সড়ক ব্যবহারকারী প্রবীণ বয়সি খালেক মাতুব্বর, ব্যবসায়ী ছালাম মোল্লা ও দেলোয়ার মল্লিক সড়ক সংস্কারের কাজটি দ্রুত সম্পন্ন হওয়ায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
মেসার্স কামরুল এন্ড ব্রাদার্সের ম্যানেজার মোঃ মঞ্জুর মোল্লা বলেন, কঠোর তদারকির মধ্যে আমরা এই কাজটি বাস্তবায়ন করে চলেছি। গোপালগঞ্জ এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ এহসানুল হক স্যার ও মুকসুদপুর উপজেলা প্রকৌশলী
বি এম মাহমুদুল হাসান স্যার উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ আমিনুর রহমান স্যারদের দিকনির্দেশনায় এ কাজ এগিয়ে চলছে। ইনশাল্লাহ আমরা খুব শীঘ্রই কাজটি সম্পন্ন করতে পারবো।
মুকসুদপুর উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ আমিনুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) গোপালগঞ্জ-এর বাস্তবায়নে রুরাল কানেক্টিভিটি ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট (RCIP)-এর আওতায় ২১ কোটি ৭৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ে প্রায় ১৪ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার কাজ শুরু হয় তার মধ্যে গুরুত্ব বিবেচনায় ৬৯০ মিটার সড়ক আরসিসি ঢালাই এর আওতায় আনা হয়। যার প্রস্থ ৫.৫ মিটার ও উচ্চতা ৮ ইঞ্চি যা বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলীদের পরামর্শে গোপালগঞ্জ এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ এহসানুল হক স্যারের সার্বিক তত্ত্বাবধানে উপজেলা প্রকৌশলী স্যার সহ আমাদের সহকর্মীরা গুণগত মন ঠিক রেখে টিম ওয়াইজ এ সড়ক সংস্কারে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন। খুব শীঘ্রই আমরা সংস্কার কাজটি সম্পন্ন করতে পারবো।
Leave a Reply