ফরিদগঞ্জ সরকারি ডিগ্রি কলেজে ‘জয় বাংলা’ স্লোগানকে কেন্দ্র করে হট্টগোল, ছাত্র আটক ও মুক্তি
মোঃ নাঈম হোসেন পলোয়ান:চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ সরকারি ডিগ্রি কলেজে ‘জয় বাংলা’ স্লোগানকে কেন্দ্র করে ছাত্র আটক ও হট্টগোলের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে কলেজে প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা চলাকালীন এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ক্লাসের বাহিরে কয়েকজন শিক্ষার্থী একসাথে ছিলো। এ সময় তাদের একজনের মুখ থেকে “জয় বাংলা” স্লোগান উচ্চারিত হয়। ঘটনাটি কলেজ ক্যাম্পাসে থাকা ছাত্রদল সমর্থিত নেতাকর্মীদের কানে গেলে তারা প্রশাসনকে খবর দেয়।
পরে পুলিশ এসে এইচএসসি ২০২৫ ব্যাচের বিজ্ঞান বিভাগের পরীক্ষার্থী মমিন নামে এক শিক্ষার্থীকে আটক করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় কলেজের অন্যান্য শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে পুলিশের গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে পড়ে এবং মমিনকে মুক্তির দাবিতে স্লোগান দিতে থাকে। খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং মমিনকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে ফরিদগঞ্জ সরকারি ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ শাহ মোহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ বলেন,
“দলীয় কোন প্রোগ্রাম বা নির্ধারিত কোন মিছিল ছিল না।মমিন একজন পরীক্ষার্থী। পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে বাহির থেকে ‘জয় বাংলা’ শব্দের আওয়াজ শোনা গিয়েছে। তবে কে জয় বাংলা শব্দ উচ্চারণ করেছে তা আমরা নিশ্চিত নই।
পাশের ক্লাসে থাকা কলেজের গণিত বিভাগের প্রভাষক বেলায়েত হোসেন বলেন,
ক্লাসের বাহিরে কয়েকজন একসাথে ছিল, হঠাৎ ‘জয় বাংলা’ আওয়াজ শোনা গিয়েছে। তবে কে দিয়েছে তা নিশ্চিত নই।
ফরিদগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদল নেতা মো. আশিক বলেন,
“আমাকে কলেজ ক্যাম্পাস থেকে জানানো হয়েছে, কলেজে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়া হয়েছে। আমি তাদের বলেছি কিছু না বলতে—আমি থানায় জানাচ্ছি। পরে থানা পুলিশকে জানানোর পর পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে প্রমাণ পাওয়ায় তাকে আটক করে। পরে তার সহপাঠী ছাত্রলীগের কর্মীরা পুলিশের গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে তাকে নিয়ে যেতে বাধা দেয়।”
ফরিদগঞ্জ সরকারি ডিগ্রি কলেজের জুম্মান পাঠান বলেন,
“মমিন হচ্ছে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আবু সাঈদ সরকারের ভাতিজা। আমি ক্যাম্পাসের বড় ভাই হিসেবে তাদের অনেকবার বলেছি, ফেসবুকে উল্টাপাল্টা কিছু লিখবে না। তোমরা আমার ক্যাম্পাসের ছোট ভাই, তোমাদের সাথে আমার কোনো বিরোধ নেই—তোমরা পড়াশোনা করো।”
মুমিনের সহপাঠী এইচএসসি ২০২৫ ব্যাচের অন্যান্য শিক্ষার্থীরা বলেন,
“সে একজন পরীক্ষার্থী, তার সামনে পরীক্ষা। তাকে ছাত্রলীগের ট্যাগ দিয়ে এমন মুহূর্তে অযৌক্তিকভাবে ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, যার কোন প্রমাণ নেই। আমরা তার মুক্তি চাই।”
ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ শাহ আলম বলেন,
“তাকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার পর ফরিদগঞ্জ সরকারি ডিগ্রি কলেজের শিক্ষকদের সঙ্গে নিয়ে বিষয়টি তদন্ত করেছি।যখন জয় বাংলা স্লোগান শোনা গিয়েছে তখন পরীক্ষা চলছিল, বাহির থেকে ‘জয় বাংলা’ স্লোগানের শব্দ এসেছে। মমিন একজন পরীক্ষার্থী সে পরীক্ষার হলে ছিলেন। তাই তার বিরুদ্ধে কোন প্রমাণ না পাওয়ায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।”
Leave a Reply