পারিবারিক পুষ্টি বাগানের বরাদ্দ আত্মসাৎ -এর অভিযোগ কোটালীপাড়া উপজেলা কৃষি অফিসার দোলন চন্দ্র রায়ের বিরুদ্ধে
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের ৩৭১টি পারিবারিক পুষ্টি বাগান রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতের জন্য বরাদ্দ পাওয়া ৭লক্ষ ৪২ হাজার টাকা কোন প্রকার কাজ না করে আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে কৃষি অফিসার দোলন চন্দ্র রায়ের বিরুদ্ধে।
এমনি তথ্য উঠে এসেছে একাধিক সাংবাদিকদের অনুসন্ধানে। ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে পারিবারিক পুষ্টি বাগান স্থাপনের বরাদ্দ পাওয়া কৃষকরা জানান, আমরা গত ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে যা পাওয়ার পেয়েছি। ২০২৪ -২৫ অর্থ বছরে আমাদের পুষ্টি বাগান রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতের জন্য উপজেলা কৃষি অফিস থেকে কোন সার, ওষুধ, ট্রেনিং অথবা কোন টাকা পয়সা দেওয়া হয়নি। শুনেছি ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে আবারো পূর্বের তালিকাভুক্ত কৃষকদের বিতরনের জন্য বরাদ্দ এসেছিলো।
অনুসন্ধানে আরো জানা গেছে ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে তালিকাভুক্ত কৃষকদের মাঝে ৩৭১টি পারিবারিক পুষ্টি বাগান স্থাপনের জন্য বরাদ্দ পেয়েছিলো কোটালীপাড়া উপজেলা কৃষি অফিস। তৎকালীন সময়ে নামমাত্র কয়েকটি পুষ্টি বাগান স্থাপন করে অধিকাংশ টাকা তছরুপ করেছেন কৃষি অফিসার দোলন চন্দ্র রায়। এছাড়াও ভাসমান বেডে সবজি ও মসলা গবেষণা, সম্প্রসারণ ও জনপ্রিয় করণ প্রকল্প থেকে পাওয়া বরাদ্দ যথাযথভাবে বাস্তবায়ন না করে লুটপাট করেছেন তিনি। এছাড়াও অভিযুক্ত ওই কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কৃষকদের প্রণোদনা পণ্য যেমনঃ সার, বীজ, কীটনাশক ও বিভিন্ন ট্রেনিংয়ে অনারিয়াম কম ও লাঞ্চে নিম্নমানের খাবার দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
প্রসঙ্গতঃ কোটালীপাড়া উপজেলা সাবেক আওয়ামীলীগ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাচনী এলাকা হওয়ায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তৎকালীন সময়ে বিশেষ কিছু বরাদ্দ এসেছিলো এই উপজেলায়। যার তিন ভাগের এক ভাগ বরাদ্দের কাজও বাস্তবায়ন করেননি কৃষি কর্মকর্তা দোলন চন্দ্র রায়। তৎকালীন সময়ে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ও অডিট অফিসারদের ম্যানেজ করে সিংহভাগ টাকা হাতে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
দোলন চন্দ্র রায় ২০২৩ সালের ৫ জুলাই কোটালীপাড়া উপজেলা কৃষি অফিসে যোগদান করেন। এর আগে তিনি বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলায় কর্মরত ছিলেন। জানা গেছে সেখানেও তিনি সরকার প্রদত্ত বিভিন্ন প্রণোদনা ও বরাদ্দ থেকে সাধারণ কৃষকদের বঞ্চিত করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। বিশ্বস্ত সূত্রে জানাগেছে কৃষি অফিসার দোলন চন্দ্র রায় জ্ঞাত আয় বহির্ভূত অর্থ দিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে একাধিক বাড়ি ও বেশ কিছু কৃষি জমি কিনেছেন বলে জনশ্রুত রয়েছে। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য উদঘাটনের জোর দাবি জানিয়েছেন সাধারণ কৃষক সহ সচেতন মহল।
এ সকল অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত কৃষি অফিসার দোলন চন্দ্র রায় আমাদের প্রতিনিধিকে বলেন, সংবাদ প্রকাশ করলে দেহ থেকে মাথা আলাদা হয়ে যাবে। কোটালীপাড়ার অনেক সাংবাদিকদের সঙ্গে আমার ওঠাবসা। একটা সংবাদ বিপক্ষে গেলে ১০টা সংবাদ পক্ষে করাবো।
এ বিষয়ে কোটালীপাড়া উপজেলা নিবার্হী অফিসার (ইউএনও) সাগুফতা হক আমাদের কন্ঠকে বলেন, কৃষকদের বরাদ্দ আত্মসাৎ বিষয়গুলো খুবই স্পর্শ কাতর। আমি বেশ কিছুদিন মাতৃত্বকালীন ছুটিতে ছিলাম, তাই আমার অনেক কিছুই জানা নেই। আমি ঢাকায় ট্রেনিংয়ে আছি। কোটালীপাড়ায় ফিরেই তদন্ত শুরু করবো, সত্যতা পেলে কৃষি অফিসারের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর -এর উপ-পরিচালক মোঃ মামুনুর রহমান বলেন, আমি এই জেলায় নুতন দায়িত্ব নিয়েছি, অনেক কিছুই আমার জানা নেই আগামীকাল অফিসে এসে ফাইল দেখে বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করবো।
Leave a Reply