গোপালগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নানাবিধ দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরেজমিনে গিয়ে প্রাথমিকভাবে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিএইচএ ডা. নন্দা
সেন গুপ্তা’র বিগত দুই মাস আগে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি বদলী হয়। তিনি পদোন্নতি ও বদলী না হয়ে গত ৩১ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখে স্ব—পদে বহাল
থাকার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় বরাবর একটি আবেদন করেন। এ ঘটনায় অনেকেই মন্তব্য করেন— টিএইচএ কোটালীপাড়া হইতে যেতে চান না। উক্ত হাসপাতালের ডা. মুনমুন সাহা (এনেস্থেসিয়া), ডা. প্রভাষ মন্ডল (এনেস্থেসিয়া), হাসপাতাল সহ ১৫—১৬ টি ক্লিনিকে প্রাইভেট বানিজ্য করেন। এবং ডা.মুনমুন সাহা ও প্রভাষ মন্ডল একই ভিজিটিং কার্ডে দুই জনের নাম ব্যবহার
করেন। এ ছাড়াও ডা.মুনমুন সাহা হাসপাতালের সরকারি প্যাডে রোগীর ব্যবস্থাপত্রে ব্যাক্তিগত সীল ব্যবহার করেন। এদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়— টিএইচএ’র নির্দেশে এই কাজ করেন, এবং তাদের কাছ থেকে মোটা অংকের উৎকোচ গ্রহণ করেন। এতে স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হয় হতদরিদ্র্য ও সাধারন মানুষ। এ
ছাড়াও জনৈক আরিফ শেখ (৪০) কে দিয়ে ডা. মুনমুন সাহা সিজার করানোর অভিযোগ রয়েছে। তার কোন একাডেমিক ও ডাক্তারি সনদ নেই। ডা. মুনমুন সাহা মাসিক ৪০
হাজার টাকা বেতন দেয় উক্ত ভুয়া ডাক্তারকে। এ ভাবেই চলছে কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ভুক্তভোগী শেফালী (৩০), নমিতা (৩৫), ফাতেমা (২৫) সহ
অনেকে সাংবাদিকদের জানান— আমরা জানি আরিফ শেখ একজন সার্জিক্যাল ডাক্তার। অন্যদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডা. ইব্রাহিম মোল্লাকে
অফিসে গিয়ে পাওয়া জায়নি। অনেকে বলেন— গোপালগঞ্জে অবস্থিত তার নিজ সার্জিক্যাল ক্লিনিক নিয়ে ব্যাস্ত থাকেন তিনি। ডা. নন্দা সেন গুপ্তা এতো কি মজা পেয়েছেন যে, তিনি কোটালীপাড়া হাসপাতাল ছাড়তে চান না।
আরো অভিযোগ উঠেছে— শাহিনুর বেগম, দুলাল, অহিদুল সহ ৬/৭ জন কে হাসপাতালে ভর্তি রেখে তাদের দিয়ে হাসপাতাল ও বাসা বাড়ীতে কাজ করান। ভর্তি রোগীর মাসিক টাকা তুলে তাদের কিছু কিছু করে দেন। যাহা সম্পূর্ণ আইন পরিপন্থি। আরো জানা গেছে— ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী রীতা মৈত্রের নামে
বাসা বরাদ্দ নিয়ে গীতা নামে একজন ২য় শ্রেণীর কর্মকর্তা বসবাস করে
আসছেন। এতে দীর্ঘদিন সরকারি কোষাগারের অর্থ ফাঁকি দেওয়া হচ্ছে। একটি সূত্র জানায়— হাসপাতালের বিদ্যুৎ মিটার থেকে কয়েকটি কোয়ার্টারে অবৈধ
সংযোগ ব্যবহৃত হচ্ছে। এতে সম্পূর্ণ বিল হাসপাতালের ওপর চাপছে। এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নন্দা সেন গুপ্তার সাথে কথা হলে তিনি বলেন— এ সব অভিযোগ মিথ্যা, আমার হাসপাতালকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য কতিপয় ক্লিনিক ব্যবসায়ী এ অভিযোগ এনেছেন। এবিষয়ে সিভিল সার্জন গোপালগঞ্জ ডা. নিয়াজ মোহাম্মদ এর সাথে সরাসারি কথা হলে, এসকল অভিযোগের ছবি প্রমাণাদি দেখালে তিনি— তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বাস দেন। এঘটনায় কোটালীপাড়াবাসী প্রধানমন্ত্রীসহ উর্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
Leave a Reply