বেলায়েত হোসেন লিটন
বিশেষ প্রতিনিধিঃ
ফরিদপুরের নগরকান্দায় মুরাদ বাহিনীর হামলায় ১০ জন আহত হয়েছে বলে জানাগেছে। আহতদের ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও নগরকান্দা উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ সময় হামলাকারীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বাড়ীতে বাড়ীতে হামলা চালিয়ে ১৫টি বসতবাড়ী ও ঘরের আসভাবপত্র ভাংচুর করে ও নগদ ২০ লাখ টাকাসহ স্বর্ণালঙ্কার লুটপাট করার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও দুইটি মাইক্রো বাস ও দুইটি মোটরসাইকেল ভাংচুর করেছে। রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ৮ টার দিকে উপজেলার ডাঙ্গী ইউনিয়নের ডাঙ্গী নগরকান্দা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
জানাগেছে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ – সভাপতি ও ডাঙ্গী ইউপি চেয়ারম্যান কাজী আবুল কালাম ও সৌদি আরব দাম্মাম শহরের হাপার আল বাতেন শাখা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও গত ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী মুরাদ শেখের সাথে দীর্ঘদিন যাবত বিরোধ চলে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় মুরাদ শেখের সমর্থিত জালাল খান পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে রোববার দিবাগত রাত সাড়ে আটটার দিকে শতাধিক লোক দেশীয় অস্ত্র নিয়ে প্রতিপক্ষ কাজী আবুল কালামের সমর্থক ফারুক শেখের বাড়ীতে হামলা চালায়। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী ফারুক শেখ বাদী হয়ে ৪৫ জনের নাম উল্লেখ করে নগরকান্দায় মামলা দায়ের করেছে। এদের মধ্যে নূরে জালাল, মাসুদ হোসেন শামীম ও মোস্তফা মুন্সী কে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করেছে থানা পুলিশ।
ভুক্তভোগী হাজী ফেলু সরদার বলেন, আমরা দীর্ঘদিন যাবত আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। মুরাদ শেখ, জালাল খান বিএনপি করতো। বর্তমানে তারা আওয়ামী লীগে যোগদান করে। স্থানীয় ভাবে আমরা কাজী আবুল কালামের সমর্থিত। কিন্তু মুরাদ ও জালাল খান মাঝে মাঝেই তাদের দলে যাওয়ার জন্য আমাদের চাপ দেয়। আমরা তাতে রাজী না হওয়ায় আমাদের বাড়ীতে এভাবে হামলা করেছে। এর আগেও কয়েকবার হামলা চালিয়েছে।
ফারুক শেখ বলেন, আমি ব্যবসা বানিজ্য করি। বাংলাদেশ পিস্ এন্ড ডেভলোপমেন্ট মিশন নামে একটি এনজিও পরিচালনা করি। সেই এনজিওর ২০ লাখ টাকা বাড়ীতে আলমারীর মধ্যে রেখেছিলাম। হামলাকারীরা আলমারীর ড্রয়ার ভেঙ্গে সে টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার লুটপাট করে নিয়েছে।
এব্যাপারে জালাল খান বলেন, কোন প্রকার লুটপাট করা হয়নি। শুধু হামলা করে ঘরের বেড়া ভাংচুর করা হয়েছে।
মুরাদ শেখ বলেন, এ ঘটনার সাথে আমি জড়িত নই। হামলাকারীরা আমার পক্ষের এটা সঠিক। তবে এই যে ন্যাক্কার জনক ঘটনা ঘটিয়েছে আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। হামলার সাথে যারা জড়িত তাদের বিচার দাবী করি।
ডাঙ্গী ইউপি চেয়ারম্যান কাজী আবুল কালাম বলেন, মুরাদ শেখ এলাকায় একটি বাহিনী গড়ে তুলেছে। মুরাদ বাহিনীর তান্ডবে অতিষ্ঠ এলাকাবাসি। একের পর এক বাড়ীতে হামলা, ভাংচুর, লুটপাট করছে এই বাহিনী। এলাকায় জুয়ার আসর, মাদকের ব্যবসা, চাঁদাবাজী, চুরি ছিনতাই সহ বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত এই মুরাদ বাহিনী। এ নিয়ে এলাকাবাসি আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নিকট অভিযোগ করেছেন। পুলিশ মাঝে মাঝে অভিযান চালিয়ে এ বাহিনীর কয়েকজনকে ইতিমধ্যে গ্রেফতারও করেছেন। আদালতের মাধ্যমে জামিনে এসে আবার শুরু করেন তান্ডব।
থানার ওসি তদন্ত বিকাশ মন্ডল বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
Leave a Reply