– বেলায়েত হোসেন লিটন
ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার প্রবীণ সাংবাদিক আঃ মজিদ মিয়া ডেঙ্গুর জ্বরের কাছে হার মেনে মৃত্যুর কোলে ঢলে পরেছেন (ইন্না-লিল্লাহ —-রাজিউন)। সে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে কয়েক দিন ভর্তি ছিলেন সদরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।
হঠাৎ কিছুটা উন্নতি হয়। এদিন রক্তে প্লাটিলেটের কাউন্ট ধরা পড়ে ১ লাখ ৫৬ হাজার।
এরপর হাসপাতাল ছেড়ে বাড়ী ফিরে যান আঃ মজিদ ভাই (নানা)। কিন্তু মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১ঃ ৩০ মিনিটে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন তিনি। এসময় তার বয়স হয়েছিল প্রায় ৭৫ বছর। তিনি ছিলেন জাতীর শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা।
ডেঙ্গু চিকিৎসায় কিছুটা সুস্থ হয়ে উঠার পর তিনি হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হোন বলে অনেকেই ধারনা করছেন।
আঃ মজিদ মিয়া ওপেন হার্ট সার্জারী করা রোগী ছিলেন।
তিনি সদরপুর প্রেস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। সেই সাথে ফরিদপুর প্রেস ক্লাবেরও সদস্য ছিলেন। তিনি দৈনিক ইত্তেফাকের সদরপুর উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে দীর্ঘ বছর দ্বায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
ফরিদপুরের নয়টি উপজেলার সাংবাদিকেরা আঃ মজিদ মিয়াকে নানা ভাই হিসেবে সম্ভোধন করতেন। আমিও তার ব্যতিক্রম করিনি। আমি মজিদ ভাইকে নানা বলে ডাকতাম। এমনকি তার আপন ছোট ভাই দৈনিক ভোরের কাগজ ও বাংলা টিভি সদরপুর প্রতিনিধি নুরুল ইসলামকেও নানা বলেই ডাকি।
আঃ মজিদ মিয়া (নানা) সদরপুরের মতো নিয়মিত নগরকান্দায় যাতায়াত করতেন। বিশেষ করে তাদের পৈতৃক অনেক সম্পত্তি নগরকান্দায় থাকার কারনেই নগরকান্দায় তার আশা যাওয়া বেশি হতো।
তিনি নগরকান্দায় আসলে সাংবাদিক বোরহান আনিস, নিজাম নকীব, নজরুল ইসলাম ও আমাকে ফোন দিতো। এবং প্রেস ক্লাবে এসে বসতেন। বড় ভাইয়ের মতো নানাবিধ দিক নির্দেশনা দিতেন। সবাইকে এক সাথে মিলে মিশে থাকার পরামর্শ দিতেন। সর্বোপরি সকলের সাথেই ভালো ব্যাবহার করতেন। তিনি ফরিদপুর প্রেস ক্লাবের সদস্য হওয়ায় জেলার সকল সাংবাদিকদের সাথেও তার সম্পর্ক ছিলো মধুর। আমি (আমরা) যদি সদরপুরে কোন কাজে গেলে নানার সাথে দেখা করতাম। শত ব্যাস্ততা থাকলেও আমাদের দেখা মাত্র কাজ রেখে আমাদের সাথে সময় দিতো। খোজ নিতো কি খাইছো, কি খাবা। একেবারেই কিছু না খাওয়ায়েই ছাড়তোনা।
আঃ মজিদ মিয়ার তিন ছেলে এক মেয়ে। দুই ছেলে এখনও প্রবাসে রয়েছেন। তার ছিলোনা কোন অর্থিক সমস্যা। সাংবাদিকতায় তার কোন বদনামও আসেনি কোন দিন। আঃ মজিদ মিয়ার ছোট ভাই নুরুল ইসলাম জানান সে আমাদের শুধু বড় ভাইয়ই নয়। সে আমাদের পুরো পরিবারের সদস্যদেরকে পিতার মতোই আগলে রেখেছেন। বুধবার বাদ আসর রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় জানাযা শেষে তার লাশ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়। এসময় প্রশাসন, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও তার পেশা সাংবাদিকতার ভাই, বন্ধুরা উপস্থিত ছিলেন।
আল্লাহুতায়ালা এই ভালো মনের মানুষ আঃ মজিদ মিয়াকে যেন বেহেশত নসিব করেন -আমিন।
Leave a Reply